অনুসন্ধান ফলাফলগুলি - Roosevelt, T.
থিওডোর রুজভেল্ট

শৈশবে অ্যাজমায় ভুগে দুর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী রুজভেল্ট কঠোর পরিশ্রম ও সক্রিয় জীবনযাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সমস্যা কাটিয়ে উঠেন। তিনি বাড়িতেই শিক্ষা লাভ করেন এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার আগেই প্রকৃতিবিদ্যা নিয়ে আগ্রহ গড়ে তোলেন। তাঁর লেখা বই দ্য নেভাল ওয়ার অব ১৮১২ তাঁকে একজন ইতিহাসবিদ ও জনপ্রিয় লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠা দেয়। রুজভেল্ট নিউ ইয়র্ক স্টেট লেজিসলেচারে রিপাবলিকানদের সংস্কারপন্থী গ্রুপের নেতা হয়ে ওঠেন। তাঁর প্রথম স্ত্রী অ্যালিস হ্যাথাওয়ে লি রুজভেল্ট এবং মা মার্থা বুলোচ রুজভেল্ট একই রাতে মারা যান, যা তাঁকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে বাধ্য করে। তিনি ডাকোটাতে একটি গবাদি পশুর খামার কিনে সেখানকার জীবনযাপনের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠেন।
ম্যাককিনলির প্রশাসনে নৌবাহিনীর সহকারী সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে রুজভেল্ট ১৮৯৮ সালে স্পেনের বিরুদ্ধে নৌযুদ্ধের পরিকল্পনায় সাহায্য করেন। তিনি এই পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাফ রাইডার্স নামে একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করেন এবং কিউবায় স্প্যানিশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। যুদ্ধের নায়ক হিসেবে দেশে ফিরে তিনি ১৮৯৮ সালে নিউ ইয়র্কের গভর্নর নির্বাচিত হন। তবে রাজ্যের রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাঁর উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনায় অসন্তুষ্ট হয়ে ম্যাককিনলিকে ১৯০০ সালের নির্বাচনে তাঁর রানিং মেট হিসেবে মনোনয়ন দিতে রাজি করায়। ম্যাককিনলি-রুজভেল্ট জুটি জয়লাভ করলে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হন।
মাত্র ৪২ বছর বয়সে ম্যাককিনলির হত্যাকাণ্ডের পর রুজভেল্ট রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন, যা তাকে (এখনও পর্যন্ত) সর্বকনিষ্ঠ রাষ্ট্রপতি হিসেবে ইতিহাসে স্থান দেয়। প্রগ্রেসিভ আন্দোলনের নেতা হিসেবে তিনি "স্কোয়্যার ডিল" নামে তাঁর অভ্যন্তরীণ নীতি চালু করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল সকল নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার, ক্ষতিকর মনোপলি ভাঙা, রেলওয়ে নিয়ন্ত্রণ এবং বিশুদ্ধ খাদ্য ও ওষুধ নিশ্চিত করা। রুজভেল্ট প্রকৃতি সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দিয়ে জাতীয় উদ্যান, বন ও স্মৃতিস্তম্ভ প্রতিষ্ঠা করেন। বৈদেশিক নীতিতে তিনি মধ্য আমেরিকাকে গুরুত্ব দিয়ে পানামা খাল নির্মাণ শুরু করেন। তিনি নৌবাহিনী সম্প্রসারণ করেন এবং নৌশক্তি প্রদর্শনের জন্য গ্রেট হোয়াইট ফ্লিটকে বিশ্ব ভ্রমণে পাঠান। রুশ-জাপান যুদ্ধ সমাপ্তিতে তাঁর সাফল্য তাঁকে ১৯০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার এনে দেয়, যা কোনো আমেরিকানের প্রথম নোবেল জয়। ১৯০৪ সালে পূর্ণ মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে তিনি ১৯০৮ সালে উইলিয়াম হাওয়ার্ড টাফ্টকে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে প্রস্তুত করেন।
টাফ্টের রক্ষণশীল নীতিতে হতাশ হয়ে রুজভেল্ট ১৯১২ সালে রিপাবলিকান প্রার্থী মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করেন এবং ব্যর্থ হন। এরপর তিনি প্রগ্রেসিভ পার্টি গঠন করে নির্বাচনে দাঁড়ান, যা রিপাবলিকান ভোট বিভক্ত করে ডেমোক্র্যাট উড্রো উইলসনের জয় নিশ্চিত করে। এরপর রুজভেল্ট অ্যামাজন অববাহিকায় একটি অভিযানে নেতৃত্ব দেন, যেখানে তিনি প্রায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি উইলসনের নিরপেক্ষতাবাদী নীতির সমালোচনা করেন এবং ফ্রান্সে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যাত হয়। ১৯১৯ সালে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে এবং তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তিনি সর্বকালের সেরা মার্কিন রাষ্ট্রপতিদের একজন। উইকিপিডিয়া দ্বারা উপলব্ধ